মিশরের  পিরামিডের অজানা রহস্য



মিসরীয় সভ্যতা জ্ঞান-বিজ্ঞানে কত দূর উন্নতি করেছিল, তার বড় নিদর্শন পিরামিড। আজ থেকে সাড়ে চার হাজার বছর আগে কীভাবে এগুলো তৈরি হলো, তা নিয়ে জল্পনাকল্পনার শেষ নেই। এলিয়েন কিংবা দেবতাদের মিথলজি ভেঙে আজকের বিজ্ঞান অনেকখানিই উদ্ধার করতে পেরেছে পিরামিড রহস্য...


একটা সময় পিরামিড-র করা অসস্থান মনে করা হতো। এই সুযোগে তরুণ ব্যবসায়ীরা একে ভিনগ্রহীদের তৈরি স্থাপতা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। সুইস লেখক এরিক ঘন দানিকেনের মতো কিছু মানুষ পিরামিডের সঙ্গে এলিয়েনের মিথ জড়িয়ে লিখেছেন অ বই। সেসব বই দেদার বিকিয়েছে বিশ্ববাজারে, কোটি কোটি ডলার ঘরে তুলেছেন লেখক আর তাদের প্রকাশকেনা। কিন্তু দিন বদলেছে। প্রযুক্তি আর সময়ে মানুষ ভাঙতে পেরেছে পিরামিড- রহস্যের আসল। এখন আর একে ভিনগ্রহী প্রাণী বা দানবাকৃতির মানুষের তৈরি স্থাপনা বলে চালানোর উপায় নেই। পিরামিড তৈরির জন্য প্রাচীন মিসরীয়দের বৈজ্ঞানিক জ্ঞান, কারিগরি দক্ষতার জয়গান কাছে আধুনিক বিজ্ঞান। অনেকখানিই উদ্‌ঘাটিত হয়েছে, কীভাবে তৈরি হয়েছিল এসব অক্ষম কীর্তি।



পিরামিডের ইতিহাস মৃত্যুমোড়ানো। তাজমহলের মতো ভালোবাসার প্রেতীক নয় পিরামিড। প্রাচীন মিসরে ফারাও ও তাদের পারিবারিক, করনের রক্ষাকবচ এগুলো। পিরামিডের আগেও কবর ছিল: রক্ষাকবচ। মাস্তারা নামে একারনের আভার পর তৈরি করে তার ভেতর লাশ রাখা হতো। মাতাবা আসলে চারকোনা ইট-পারে স্তূপের মতো। মৃত ব্যক্তিদা মর্যাদার ওপর নির্ভর করে এগুলো তৈরি হতো মাটি, ইট বা বিভিন্ন ধরনের পাথর দিয়ে। হ্যাঁ, সেকালেই হট তৈরি করতে জানত মিসরীয়রা। মাটি, খড়, বালু ইত্যাদি দিনো ইট তৈরি করত। ফারাওদের মাস্তাবার দেয়াল তৈরি হতো লাইমগ্যোন দিয়ে। এসব লাইমস্টোন বা চাপা পাওয়া যেত বর্তমান কায়রো ও এর আশপাশের অঞ্চলে। তবে এসব মাস্তানা তৈরিতে খুব বেশি। স্থাপত্যশৈলী দেখানো হতো, তা কিন্তু না।।

মাস্তাবার মূল কাঠামো থাকত মাটির ওপরে বসানো। অনেকটা মঞ্চ বা বেদির মতো। বাইরে থেকে দেখলে নিরেট মনে হবে। থাকত দুটি দরজা। একটা আসল, আরেকটা নকল। এসব দরজা দিয়ো ঢুকলে আপনি গিয়ে পড়বেন চারকোনা সরু এ টানেলের তেতা। এই টানেলের ভেতর নামলে আর দেখতে হবে। না। গভীর টানেলের ভেতর দিয়ে গিয়ে পড়বেন সত্যিকারের কবরখানায়। চারকোনা কফিনের মতো জায়গাটা। সেখানে থাকতেও পারে ফারাওয়ের মৃতদেহ। যদি মৃতদেহের হদিস পান, তাহলে ধরে নেবেন, সঠিক দরজা দিয়েই আপনি ঢুকেছিলেন। মৃতদেহের সঙ্গে মিলনে অনাস্ত্র ধনরত্ন আর ফারাওয়ের ব্যবহার্য দামি জিনিস। আর যদি কিছুই না পান অত দূর গিয়ে, মনের डिस নেবেন, দিয়ে ঢুকেছিলেন। আবার আসল চোে ঢুকে মৃতদেহ আবিষ্কার করেও কিন্তু স্বস্তি নেই আপনার।



কারণ, খাড়া চেম্বার বেয়ে ওপরে ওঠা দুঃসাধ্য। ধনরত্নশিকারি চোর আর ডাকাতদের হাত থেকে এগুলো রক্ষার জন্যই এই ব্যবস্থা করা হয়েছিল। তবুও ডাকাতদের হাত থেকে রক্ষা পায়নি বেশির ভাগ ধনরত্নই।


মাজাবার ব্যবহার মিসরীয়রা বহুকাল করেছে। কিন্তু ।এগুলো তাদের নিরান্ত আবিষ্কার নয়। সেকালে দজলা ও ফোরাত (অর্থাৎ ইউক্রেটিস ও টাইগ্রিস নদীর অববাহিকায় গড়ে উঠেছিল মেসোপটেমিয়া সভ্যতা। এই সভ্যতায় মাস্তাবার। প্রচলন ছিল। সেখান থেকেই এ জ্ঞান পেয়েছিল মিসরীয়রা।


সত্যিকারের পিরামিড তৈরির কাজটা শুরু হয় মিসরের তৃতীয় রাজবংশের রাজত্বকালের শুরুতেই। এই রাজবংশের প্রথম ফারাও ছিলেন জোসার। আগের সব ফারাওয়ের পদার্থ অনুসরণ করে তিনিও চেয়েছিলেন বেঁচে থাকতেই নিজের সমাধি তৈরি করতে। মাঝাবার চেয়ে বেশি কিছু হোক, সে ভাবনা কার মাথায় প্রথম এসেছিল। জোসারের, নাকি ইমহোটেপের? এ নিয়ে বিতর্ক আছে। তবে বিতর্ক নেই প্রথম পিরামিড তৈরির ইতিহাস। নিয়ে। সবচেয়ে জনপ্রিয় মতটার কথাই আমরা বলি। জোসার চেয়েছিলেন, বাতিক্রম কিছু করতে। তাঁর সমাধিটা কেমন হবে, তার একটা ইঙ্গিত দিয়েয়ছিলেন ইমহোটেপকে। বলেছিলেন, এমন সমাধি যেন তাঁর হয়, যেটা বাকি সবার চেয়ে আলাদা। হবে। যেন যুগ যুগ ধরে মানুষ মনে রাখে তাকে।



ফারাও মদ্যমাশ দিয়েই খালাস। কাজ তো করতে হবে ইমহোটেপকেই। ফারাও অবশ্য ম্যানেন, দুনিয়ার সবচেয়ে বড় মাথা ইমহোটেপ, তিনি ভেবে নিশ্চয়ই এমন কিছু শেষ কমাবেন। যেটা আসলে ইতিহাস তৈরি করবে। তা ইমহোটেপ করেছিলেনও।

Leave a Comment